Chapter- 5 বছিরদ্দি মাছ ধরিতে যায়
প্রশ্নোত্তরঃ
১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরের জন্য প্রশ্ন :
(ক) বছিরদ্দিব জীবিকা কী?
উত্তরঃ বছিরদ্দি মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে।
(খ) রাত দুপুরে মেঘের শব্দ কীরকম হয়?
উত্তরঃ রাত দুপুরে মেরের শব্দ কড়াৎ খাড়াৎ হয়।
(গ) দুই …………… আধার চিরি বিজলী যখন জ্বলে ভুবনময়’ (শূন্য স্থান পূর্ণ করো)
উত্তরঃ নখেতে।
(ঘ) তুফান কিসের মতো ছোটে?
উত্তরঃ তুফান জোর দাপটে ছোটে।
২। সংক্ষিপ্ত উত্তরের জন্য প্রশ্নঃ
(ক) বিলের জলে কী কী মাছ পাওয়া যায়?
উত্তরঃ বিলের জলে রোহিত, কাতল, কই, মাগুর মাছ পাওয়া যায়।
(খ) বছিরদ্দি কী ভাবে মাছ ধরে?
উত্তরঃ বছিরদ্দি একহাতে তীক্ষ্ণ টেটা ধরে এবং অপর এক বাতে মশাল
জ্বালিয়ে বীর দাপটে মাঠের পরে মাছ ধরতে ছোটে।
(গ) কে কোথায় ফাঁসি দিতে গিয়েছিল?
উত্তরঃ তাল তলাতে তাঁতীর বধূ গলায় দড়ি দিতে গিয়েছিল।
(ঘ) শেওড়া, বনে, হাজরাতলায়, শ্মশানঘাটায়, বটের শাখায় কারা কারা থাকে?
উত্তরঃ শেওড়া বনে পেত্নী, হাজরাতলায়— পিশাচ, শ্মশানঘাটায় পেত্নী এবং বাটের শখে পিশাচ এরা থাকে।
৩। দীর্ঘ উত্তরের জন্য প্রশ্নঃ
(ক) ‘বছিরদ্দি মাছ ধরিতে যায়’ কবিতায় কবি জসীমুদ্দিন মাছ ধরার যে
সরস বর্ণনা দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তরঃ বাংলা কবিতার কবি জমীমুদ্দিন একটি নতুন সুর সৃষ্টি করতে সক্ষম
হয়েছিলেন। তিনি পল্লি কাব্যধারার একজন আধুনিক কবি। কবিতাটি রচিত হয়েছে গ্রাম
বাংলার এক সরল, স্বাস্থ্যবান সাহসী যুবককে নিয়ে। যুবকটির নাম বছিরদ্দি। রাত দুপুরে
যখন মেঘে মেঘে কড়াৎ কড়াৎ শব্দ হয়, তুফান যখন জোর দাপটে ছোটে তখন রছিরদ্দির ঘুম ভেঙে যায় এবং সে তখন এক
মুহূর্তও ঘরে থাকতে পারে না। তখন বিলের জলে রোহিত, কাতলা মাছেরা ফাল দেয়, কই, মাগুরের দলও সাঁতার দিয়ে গায়ের খালে বিলে যায়। এমন সময় বছিরদ্দি
এক হাতে তীক্ষ্ণ টেটা ধরে আর এক হাতে মশাল জ্বালয়ি সে বীর দাপটে মাঠে ছোটে। সেই
মাঠে তাল তলাতে গিয়ে গলায় দাড়ি দিয়ে মরেছিল তাঁতির বধূ। শেওয়া বনে পেত্নী নাচে, হাজরাতলায় পিশাচে দেয় শিস, বিলের ধারে আগুন জ্বালিয়ে ভূতেরা
সব ফিরছে নানা দেশে। বছিরদ্দির কোনো কিছুকে ভয় করে না, মলাল জ্বালিয়ে সে একলা মাছ ধরতে যায়, হাতে তার তীক্ষ্ণ টেটা, গায়ে তার মোষের মত জোর। রাত দুপুরে বিলের পথে বছিরদ্দি মাছ মারতে
যায়, সেই সময় তুফানও চলছে ক্ষিপ্ত ঘোড়ার মত তবুও ঝড়, তুফান, ভূত সব কিছুকে উপেক্ষা কারে বছিরদ্দি বিলের পথে মাছ ধরতে যায়।
(খ) “বছিরদ্দির ঘুম ভেঙে যায়”— কোন বছিরদ্দির ঘুম ভেঙে যায় ? তারপর সে কী করে?
উত্তরঃ রাত দুপুরে যখন মেঘে কাড়াৎ কাড়াৎ শব্দে গর্জন করে, আর বাতাসে তুফান ছোটে জোর দাপটে তখন বছিরদ্দির ঘুম ভেঙে যায়। এবং
তারপর সে একমুহুর্তের জন্যও ঘরে থাকে না। হাতে একটি তীক্ষ্ণ টেটা ধরে আর এক হাতে
মশাল জ্বালিয়ে কিছুকে ভয় না করে সে বিলের ধারে মাছ ধরতে যায়।
(গ) ব্যাখ্যা করো :
“একলা চলে বছিরদ্দি জোর দাপটে চরণ
দুখান ফেলে।”
উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি পল্লিকবি জসীমুদ্দিন রচিত ‘বছিরদ্দি মাছ
ধরিতে যায়’ কবিতাটি থেকে গৃহিত হয়েছে।
অংশটিতে বছিরদ্দির একলা পথে জোর দাপটে চলার প্রসঙ্গটিকে উল্লেখ করা
হয়েছে। রাত দুপুরে মেঘ গর্জন করে যখন তুফান ছোটে তখন বছিরদ্দির ঘুম ভেঙে যায়। আর
তখন সে এক মুহূর্তও বাড়িতে না থেকে হাতে একটি টোটা নিয়ে বিলের পথে ছোটে মাছ
ধরতে। এক হাতে মশাল জ্বালিয়ে বীরের মতো দাপটে ছোটে সে। তুফান ঘন অন্ধকারে
ভূত-পিশাচের ভয়ও বছিরদ্দিকে আটকাতে পারে না। কারণ বছিরদ্দি জানে তাল তলাতে তাঁতির
বধূ গলায় দাড়ি দিয়ে মরেছিল আর তখন হাজরাতলায় পিশাচেরাও শিস দেয় বিলের ধারে
ভূতেরা নেচে বেড়ায়। কিন্তু তবুও বছিরদ্দির কোনো ভয় নেই। সে মশাল জ্বালিয়ে
রাতের অন্ধকারে, ভূতের ভয় সবকিছুকে দূরে ঠেকিয়ে জোর দাপটে চলে মাছ ধরতে। কারণ
বছিরদ্দির নেশাই হ’ল মাছ ধরা।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরের জন্য প্রশ্নঃ
(ক) বছিরদ্দি মাছ ধারতে যায়’ কবিতাটির কবি কে?
উত্তরঃ জসীমুদ্দি।
(খ) কবিতাটি জসীমুদ্দির কোন
কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত?
উত্তরঃ কবিতাটি জসীমুদ্দির ‘হাসু’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত।
(গ) জসীমুদ্দি তাঁর কোন
কাব্যগ্রন্থের জন্য আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়েছিলেন?
উত্তরঃ জসীমুদ্দি তাঁর ‘নকসীকাথার মাঠ’ কাব্যের ইংরেজি অনুবাদ “The Field of the
Embroidered Quilt” কাব্যের জন্য আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়েছিলেন।
(ঘ) হাজরাতলায় কে শিস দেয়?
উত্তরঃ হাজরাতলায় পিশাচ শিস দেয়।
(ঙ) বছিরদ্দির চোখ দেখে কার ঘোর লাগে?
উত্তরঃ বছিরদ্দির চোখ দেখে যমদূতেরও ঘোর লাগে।
(চ) পেত্নী কোথায় নাচে?
উত্তরঃ শ্মশান ঘাটায় পেত্নী নাচে।
শব্দার্থ :
চিরি – চিরে।
বিজলী – বিদ্যুৎ।
ঝাঁজর – ঝর ঝর শব্দে।
নারে – পারে না।
টাইটুকানি – টইটুম্বুর।
রোহিত – রুইমাছ।
ফাল – লাফ।
টেটা – মাছ বিধে মারবার অস্ত্র।
হিয়ে – হৃদয়।