Chapter 16 আদাব
প্রশ্নোত্তরঃ
১। অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
(ক) ‘আদাব’ গল্পের লেখক কে?
উত্তরঃ আদাব গল্পের লেখক সমরেশ বসু।
(খ) মাঝির বাড়ি কোথায় ছিল?
উত্তরঃ মাঝির বাড়ি বুড়ি গঙ্গার সুবইজায়।
(গ) সুতাকলের কর্মীর বাড়ি কোথায়
ছিল?
উত্তরঃ সুতাকলের কর্মীর বাড়ি চাষাড়া নারাইনগঞ্জে।
(ঘ) সুতাকলের কর্মী কোথায় কাজ করত?
উত্তরঃ সুতাকলের কর্মী নারাইনগঞ্জের সুতাকলে কাজ করত।
২। সংক্ষিপ্ত উত্তরের জন্য প্রশ্নঃ
(ক) ‘পরিচয়কে স্বীকার করতে উভয়েই নারাজ’উভয়ে বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? কেন তারা পরিচয় দিচ্ছিল না।
উত্তরঃ ‘উভয়ে’ বলতে নায়েব মাঝি এবং সূতাকলের মজুরের কথা বলা হয়েছে।
তারা নিজেদের পরিচয় দিচ্ছিল না কারণ তখন বিভীষিকাময় দাঙ্গার ভয়াবহ
পরিস্থিতি চলছে। দা, সড়কি, ছুড়ি, কাচি নিয়ে তখন উন্মত্ত হিন্দু মুসলমান তৈরি পরস্পরকে নিধন করার
জন্য। চতুর্দিকে দাঙ্গাবাসীর উল্লাস, বস্তিতে আগুন এবং মরণাতীত নারী
শিশুদের কাতর আর্তনাদ। এর মধ্যে শাসন কর্তার কারফিউ অর্ডার এবং ১৪৪ ধারা। এহেন
রুদ্ধাশ্বাস পরিবেশে প্রাণভয়ে দুজনেই দুজনকে অবিশ্বাস করে তীব্র শঙ্কায় আর
সন্দেহে অপেক্ষা করে থাকে প্রতিপক্ষের আক্রমনের।
(খ) “দোষ তো তোমাগো ওই লীগওয়ালোগোই।” বক্তা কে? লীগওয়ালোগোই বলতে কাদের বোঝানো
হয়েছে?
উত্তরঃ আলোচ্য উক্তিটির বক্তা সূতাকলের মজুরের।
লীগওয়ালোগোই বলতে দেশের নেতাদের বোঝানো হয়েছে।
(গ) “তুমি চাইলা গেলে আমি একলা থাকুম নাকি?” কে কাকে এই কথা বলেছে?
উত্তরঃ সূতা কলের মজুর নাওয়ের মাঝিকে এই কথা বলেছে।
৩। দীর্ঘ উত্তরের জন্য প্রশ্নঃ
(ক) “যেমুন বইয়া রইছ — সেই রকমই থাক।” – কে, কাকে, কেন একথা বলেছিল?
উত্তরঃ সূতাকলের মজুর নাওয়ের মাঝিকে একথা বলেছিল।
কারণ, ঘটনার শুরু বিভীষিকাময় দাঙ্গার ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে। দা, সড়কি, ছুরি, কাচি নিয়ে তখন উন্মত্ত হিন্দু- মুছলমান তৈরি পরস্পরকে নিধন করার
জন্য। চতুর্দিকে দাঙ্গাকারীর উল্লাস, বস্তিতে আগুন, আর মরণভীত নারী শিশুদের কাতর আর্তনাদ। এর মধ্যে শাসনকর্তার কারফিউ
অর্ডার এবং ১৪৪ ধারা। এহেন রুদ্ধশ্বাস পরিবেশে প্রাণভয়ে ভীত একটি লোক আশ্রয় নেয়
দুটি গলির মধ্যবর্তী স্থানে রাখা এক ডাস্টবিনের আড়ালে। সেখানে থেকে নিঃসাড়ে, মাথা তোলার সাহসটুকুও তার লুপ্ত। এমন সময় নড়ে উঠে ডাস্টবিনের অপর
পাশে তারই মত আর একটি লোক, ভীত সন্ত্রস্ত্ৰ। দুজনেই দুজনকে
অবিশ্বাস করে তীব্র শঙ্কায় আর সন্দেহে অপেক্ষা করে থাকে প্রতিপক্ষের আক্রমণের।
কিন্তু না কোনো আক্রমণ আসে না। উৎকণ্ঠায় অধৈর্য হয়ে তখন শুরু হয় পরিচয়ের পালা। এক্ষেত্রেও অথচ অপ্রত্যয়।
ক্রমশ পরিস্কার হয় তাদের পেশা, জানা যায় তাদের আবাসস্থল। একজন
নারাইনগঞ্জের সূতাকলের শ্রমিক অপরজন নৌকার মাঝি, বাড়ি বুড়ি গঙ্গার।
প্রাথমিক পরিচয়ের পরেও বিশ্বাসহীনতা দানা বেঁধে থাকে মনের মাঝে।
এরকম পরিস্থিতিতে যখন মাঝি ও সূতাকলের মজুর সন্দেহ ও অবিশ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে
নিজেদের পরিচয় দিল তখন তাদের মধ্যে একটা ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। তাই যখন মাঝি
সেই ভয়াবহ ডাস্টবিনের জায়গাটি ছেড়ে উঠে অন্যদিকে সরে যেতে চাইলো তখন সূতাকলের
মজুর আলোচ্য উক্তিটি করল।
(খ) “হ আমি মোসলমান। – কী হইছে?” – কে, কাকে, কোন প্রসঙ্গে এই কথা বলেছে?
উত্তরঃ মাঝি সুতা মজুরকে এই কথাটি বলেছে।
কাহিনির শুরু বিভীষিকাময় দাঙ্গার ভয়াবহ পরিস্থির মধ্যেষ দা সড়কি, ছুরি, লাঠি নিয়ে তখন উন্মত্ত হিন্দু মুসলমান তৈরি পরস্পরকে নিধন করার
জন্য। চতুর্দিকে দাঙ্গাকারীদের উল্লাস, বস্তিতে আগুন, আর মরণভীত নারী শিশুদের কাতর আর্তনাদ। এর মধ্যে রয়েছে শাসনকর্তার
কারফিউ অর্ডার এবং ১৪৪ ধারা। এহেন রুদ্ধশ্বাস পরিবেশে প্রাণ ভয়ে ভীত থাকে
নিঃসাড়ে, মাথা তোলার সাহসটুকুৰও তখন তার লুপ্ত। এমন সময় নড়ে উঠে ডাস্টবিনটা।
অপর পাশে তারই মত আর একটি লোক ভীত সন্ত্রস্তু। দুজনেই দুজনকে অবিশ্বাস করে। কারণ, তীব্র শঙ্কায় আর সন্দেহে অপেক্ষা করে থাকে প্রতিপক্ষের আক্রমণের।
কিন্তু যখন কোনো আক্রমণ আসে না, তখন এই দুই ভীত সন্ত্রস্ত লোক দুটোর
মধ্যে পরিচয়ের পালা শুরু হয়। ক্রমশ পরিষ্কার হয় তাদের পেশা, জানা যায়, তাদের আবাসস্থান। একজন ‘নারাইনগঞ্জের’ সুতাকলের শ্রমিক অপরজন নৌকার মাঝি তার বাড়ি বুড়ি গঙ্গার সেইপারে
সুবইডায়; প্রাথমিক পরিচয়ের পরেও বিশ্বাসহীনতা দানা বেঁধে থাকে মনের মাঝে।
সময়ের সহযোগে কণ্ঠস্বরের আন্তরিকতায় আতঙ্ক আর অবিশ্বাস ধীরে ধীরে দূরে সরতে
থাকে। পরস্পরে প্রতি নির্ভরতা বাড়ে – “তুমি চইলা গেলে আমি একলা থাকুম নাকি?” উভয়ের পরিচিতও স্পষ্ট হয়।
(গ) বিপদের আশঙ্কা সত্ত্বেও মাঝি সেই
রাত্রেই বাড়ি ফিরে যেতে চেয়েছিল কেন? মাঝির পরিণতি কী হয়েছিল?
উত্তরঃ বিপদের আশঙ্কা সত্ত্বেও মাঝি সেই রাত্রেই বাড়ি ফিরে যেতে
চেয়েছিল কারণ আটদিন ধরে সে ঘরের খবর জানে না। তার উপর ঈদ উৎসব আছে। ছেলে-মেয়ের জন্য
দুটো জামা এবং একটি শাড়ি কিনেছে সে। অথচ ঘরের খবর সে জানে না, কী অবস্থায় আছে সব। মাঝি বলছে সবাই অনেক আশা করে আছে বাপজানের জন্য।
মাঝির বিবি কেঁদে আকুল হচ্ছে তাই সে আর এখানে থাকতে চায় না, তার মন অশান্তিতে ভরে উঠেছে। তাই সে যেভাবেই হোক বাড়ি যেতে চাইছে।
মাঝির পরিণতি করুণ, মাঝি নিজের মনকে আটকাতে পারছে না, তাই সে জোর করেই এই বিভীষিকাময় পরিস্থিতি জেনেও বাড়ির দিকে রওনা
হয়। সুতা মজুরের বুক কান্নায় ভরে উঠে সে মিয়াকে যেতে দিতে চায় না, বারণ করে। কিন্তু মাঝি ছেলে-মেয়ের জন্য বন্ধুকে আদাব জানিয়ে
রাত্রির নিস্তব্ধতায় বুক ভাসিয়ে দেয়। অন্যদিকে সুতা মজুর ভাবে মাঝি এতক্ষণে
হয়তো তার পরিবারের সঙ্গে হাসি-কান্নায় মিলিত হয়েছে। কিন্তু পরক্ষণেই শোনা যায়
অন্য এক আর্তনাদ ধ্বনি। মাঝির বুকে পুলিশের গুলির রক্ত। আর সেই রক্তে তার
ছেলে-মেয়ের জন্য কেনা জামা-কাপড় ভেসে যায়। মাঝি আর্তকণ্ঠে বলে উঠে, দুশমনরা তাকে যেতে দেয়নি তার পরিবারের কাছে।
(ঘ) ‘আদাব’ গল্পের সারকথা লেখো।
উত্তরঃ সাম্প্রদায়িক হানাহানির প্রেক্ষিতে রচিত এই গল্প অন্ধ
সম্প্রদায়িকতা বিরোধী। জাতি, ধর্ম নিয়ে গোষ্ঠীতে গোষ্ঠীতে
দ্বন্দ্ব পরিবারে সংসারে পারস্পরিক মানব সম্পর্কে কী বিষময় কুফল, কী ভয়ঙ্কর যন্ত্রণা বহন করে নিয়ে আসে লেখক এই গল্পে দেখিয়েছেন।
নির্দয় জীবন বিরোধী পরিবেশের মধ্যে দাঁড়িয়ে সমরেশ বসু চরম মানবতার কাহিনি
শুনিয়েছেন। গল্পের প্রথমে দাঙ্গাকালীন পরিবেশের যে বর্ণনা লেখক দিয়েছেন তার
মধ্যে দিয়েই বিভীষিকাময় হানাহানির ভয়াল রূপটি প্রত্যক্ষ হয়ে উঠে। এইরকম
রুদ্ধশ্বাস পরিবেশে দুটি আতঙ্কগ্রস্ত প্রাণাভীত অপরিচিত মানুষের মানসিক অবস্থা
পরিস্ফুট হয় ছোট ছোট বাক্যবন্ধের মাধ্যমে। অসাধারণ সে বর্ণনা, অন্ধকার রাত্রির মৃত্যুর বিভীষিকা যেন আমাদের চোখের সামনে – “হঠাৎ ডাস্টবিনটা এখটা নড়ে উঠল। আচম্বিতে শিরশিরিয়ে উঠল দেহের সমস্ত
শিরা উপশিরা।”
তারপর মানুষ দুটির সংলাপে স্পষ্টতর হয় তাদের পারস্পরিক সন্দেহ, ভয়, আশঙ্কা, উদ্বেগ এবং আতঙ্ক। পরিবেশ পরিস্থিতি আক্রমণ করে ক্রমশ চরিত্র দুটি
মুখ্য হয়ে ওঠে। কাহিনি এগিয়ে চলে অনামা দুটি চরিত্রের কথোপকথনকে অবলম্বন করে।
তারপর জানা যায় তাদের ধর্ম ভিন্ন। চরিত্র দুটির কোনো নামকরণ করেননি লেখক। আসলে
তার কোনো একক ব্যক্তি নন। দুই ধর্মের প্রতিনিধি, যারা সোচ্চারে জানায় যুদ্ধ বিরোধী
মতামত। তাদের বড় পরিচয় তারা মানুষ। মানব ধর্মই তাদের ধর্ম। তাই ধর্মমত ভিন্ন
হওয়া সত্বেও তারা ঘনিষ্ঠ হয়, তাদের বন্ধুত্ব বাড়ে। এবং তা সম্ভব
হয়েছে তখন যখন সেই বিশেষ দুই ধর্মের মানুষ সাম্প্রদায়িক হানাহানিতে লিপ্ত। এরা
কিন্তু দাঙ্গায় স্রোতে গা ভাসায়নি। বরং প্রশ্ন তুলেছে – “আমি জিগাই মারামারি কইরা হইব কী? তোমাগো দুগা মরব, আমাগো দুর্গা মরব। তাতে দ্যাশের কী উপকারটা হইব।”
এই জিজ্ঞাসা কেবল মাত্র মাঝি, কিংবা শ্রমিকের নয়, সমাজের অধিকাংশ মানুষেরই। এক শ্রেণির মনুষ্যত্ববর্জিত অত্যাচারী
মানুষই দাঙ্গা বাধায় অতি তুচ্ছ কারণে। আর ক্ষেত্র বিশেষে তা পরিণত হয় সামাজিক, রাজনৈতিক অথবা ভয়াবহ সব ধর্মীয় যুদ্ধে। হিংসা মারামারির ঘটনায়
তাদের ক্ষুদ্র স্বার্থ সিদ্ধ হয়, এক ধরনের পাশবিক আনন্দে তারা তৃপ্ত
হয়। আর তার কুফল ভোগ করে সাধারণ নিরীহ মানুষেরা। সমরেশ বসু ‘আদাব’ গল্পে সেই কথাই বলেছেন শিল্পিত কৌশলে। যুদ্ধ প্রিয় মানুষেরা কিন্তু
ধর্ম রাজনীতি বা সমাজ নীতির দোহাই দিয়ে সাধারণ মানুষকে আলাদা করতে পারে না।
সাধারণ মানুষ তাদের যুক্তি বুদ্ধিনিষ্ঠ মানবতা বোধের সহায়তায় পরস্পরকে আঁকড়ে
ধরে, একাত্ম হয়, যেমন হয়েছে সুতাকলের শ্রমিক
নারায়ণগঞ্জের মাঝি। দাঙ্গাকারীদের হাত থেকে নিজেরা বাঁচার জন্য, তাদের পরিবারকে বাঁচবার জন্য তারা একসঙ্গে লুকিয়ে থাকে, একে অপরকে বাঁচাবার পথ দেখায়। একজনের পরিবারের সুখ-দুঃখ খুশির কথায়
অন্যজন সামিল হয়। অবশেষে গুলির শব্দে, প্রিয়জনের অমঙ্গল আনধায়ে কেঁপে
ওঠে – স্থবির হয়।
গল্পের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বিশুদ্ধ মানবপ্রেমের কথাই বলেছেন
লেখক। দ্রুতগতিতে টানটান উত্তেজনায় কাহিনি অগ্রসর হয়েছে। কোথাও বর্ণনায় আধিক্য
নেই, বা আবেগের আতিশয্য নেই। দুটো মাত্র চরিত্রের কথান, তাদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে কাহিনি এবং লেখকের বক্তব্য
সুন্দরভাবে পরিস্ফুট হয়েছে।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
১। ‘আদাব’ গল্পটির লেখক কে?
উত্তরঃ ‘আদাব’ গল্পটির লেখক সমরেশ বসু।
২। মাঝির বাড়ি কোথায়?
উত্তরঃ মাঝির বাড়ি চাষাড়া নারায়ণগঞ্জের কাছে।
৩। সূতাকলের কর্মীর বাড়ি কোথায় ছিল? এবং সে কীসের কাজ করত?
উত্তরঃ সূতাকলের কর্মীর বাড়ি বুড়িগঙ্গার হেইপারে সুবইডায়। এবং সে
নারাইনগঞ্জের সূতাকলে কাজ করত।
৪। ‘আরে না না – উইঠো না। জানটারে দিবা নাকি?” বক্তা কে?
উত্তরঃ আলোচ্য উক্তিটির বক্তা সূতা মজুর।
৫। ‘পোলা-মাইয়ার লেইগা দুইটা জামা আর
একধান শাড়ি।’ কার উক্তি? কেন জামা কাপড় শাড়ি কিনে নিয়ে
যাচ্ছিল?
উত্তরঃ আলোচ্য উক্তিটির বক্তা মাঝির । মাঝি ঈদ উপলক্ষে তার ছেলে
মেয়ের জন্য জামা কাপড় কিনে নিয়ে যাচ্ছিল।
৬। ‘যেমুন বইয়া রইছ – সেই রকমই থাক কে, কাকে বলেছে?
উত্তরঃ সুতা মজুর মাঝিকে এ কথাটি বলেছিল।
৭। ‘আদাব’ শব্দটির অর্থ কি?
উত্তরঃ ‘আদাব’ শব্দটির অর্থ হল অভিবাদন, সন্মাননীয়কে শ্রদ্ধা জানানো, সেলাম, নমস্কার।
শব্দৰ্থ :
আদাব – অভিবাদন, সম্মাননীয়কে শ্রদ্ধা জানানো, সেলাম, নমস্কার।
চোরাগোপ্তা – চোরের মত গুপ্তভাবে অতর্কিতে।
উল্লাস – আনন্দ, স্ফুর্তি।
সন্দিহান – সন্দেহজনক, সন্দেহযুক্ত।
নির্জীব – মৃতকল্প, জীবন নেই এমন।
জামা-পিব – জামা পরবে।
বাপজান – বাব।
আন্দাইরা – আঞ্চলিক উচ্চাৰণ ৷