Chapter-9 ইচ্ছাপূরণ
প্রশ্নোত্তরঃ
১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরের জন্য প্রশ্ন :
(ক) ‘ইচ্ছাপূবণ’ গল্পটি কার লেখা?
উত্তরঃ ইচ্ছাপূরণ গল্পটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা।
(খ) সুবল চন্দ্রের ছেলের নাম কী?
উত্তরঃ সুবলচন্দ্রের ছেলের নাম সুশীলচন্দ্র।
(গ) ইচ্ছাপূরণ’ গল্পে কে বাবা ও ছেলের ইচ্ছা পূরণ করেছিলেন?
উত্তরঃ ইচ্ছাপূরণ গল্পে ইচ্ছা ঠাকরুণ বাবা ও ছেলের ইচ্ছা পূরণ
করেছিলেন।
২। সংক্ষিপ্ত উত্তরের জন্য প্রশ্নঃ
(ক) ‘ইচ্ছাপূরণ’ গল্পের পিতা ও পুত্রের নাম লেখো।
উত্তরঃ ইচ্ছাপূরণ গল্পের পিতার নাম সুবলচন্দ্র এবং পুত্রের নাম
সুশীলচন্দ্ৰ।
(খ) শনিবার দিন সুশীল স্কুলে যেতে
চাইছিল না কেন?
উত্তরঃ শনিবার দিন সুশীল স্কুলে যেতে না চাওয়ার অনেক কারণ ছিল।
একদিকে ছিল সেদিন সুশীলের স্কুলে ভূগোল পরীক্ষা। অন্যদিকে পাড়ার বোসদের বাড়ি
সন্ধ্যার সময় বাজি পোড়ানোর নিমন্ত্রণ। সকাল থেকেই সেই বাড়িতে ধুমধাম চলছে তাই
সুশীলের মনের ইচ্ছা শনিবার দিনটা সে বোসেদের বাড়িতেই কাটাবে স্কুল বাদ দিয়ে।
(গ) বৃদ্ধ সুবলচন্দ্র রাত্রে ভালো
ঘুমাইতে পারিতেন না, ভোরের দিকটা ঘুমাইতেন। কিন্তু আজ
তাঁহার কী হইল, হঠাৎ খুব ভোরে, উঠিয়া একেবারে লাফ দিয়া বিছানা
হইতে নামিয়া পড়িলেন।”—
কেন তিনি এভাবে ঘুম থেকে উঠেছিলেন? উঠে তিনি কী দেখলেন?
উত্তরঃ সুবলচন্দ্র রাত্রে ভালো ঘুমাতে পারতেন না, ভোরের দিকেটাতেই ঘুমাতেন। কিন্তু সেদিন তিনি খুব ভোরে উঠে একবারে লাফ
দিয়ে বিছানা থেকে নেমে পড়লেন, কারণ তিনি খুব ছোট হয়ে গিয়েছিলেন।
ঘুম থেকে উঠে তিনি দেখলেন, তিনি খুব ছোট হয়ে গেছেন, পড়া দাঁত সবগুলি উঠেছে, মুখের গোঁফ দাড়ি সমস্ত কোথায় যে
মিলিয়ে গেছে তার চিহ্ন মাত্র নেই। রাত্রে যে ধুতি ও জামা পরে শুয়েছিলেন
সকালবেলায় তা এত ঢিলা হয়ে গেছে, যে জামার দুই হাতা প্রায় মাটি
পর্যন্ত ঝুলে পড়েছে, জামার গলা বুক পর্যন্ত নেমেছে, ধুতির কোঁচটাও মাটিতে লুটাচ্ছিল।
(ঘ) সুশীলের কয়েকজন বন্ধুর নাম
উল্লেখ করো।
উত্তরঃ সুশীলের কয়েকজন বন্ধুর নাম হল –রাখাল, গোপাল, নিবারণ, হরিশ এবং নন্দ।
(ঙ) পিতা সুবলচন্দ্র অল্প বয়স ফিরে
পেলে কী করবেন ভেবেছিলেন?
উত্তরঃ পিতা সুবলচন্দ্র ভেবেছিলেন যে তিনি অল্প বয়স ফিরে পেলে, কিছুতেই সময় নষ্ট না করে কেবল পড়াশোনা করবেন। কারণ তার মা-বাবার
আদরে তিনি পড়াশোনা ভালো রকম করেননি।
(চ) পুত্র সুশীল চন্দ্র পরিণত বয়স
লাভ করলে কী কী করবেন ভেবেছিলেন?
উত্তরঃ পুত্র সুশীল চন্দ্র ভেবেছিলেন পরিণত বয়স লাভ করতে তিনি যা
ইচ্ছে তাই করতে পারবেন, কেউ তাকে বন্ধ করে রাখতে পারবে না।
৩। দীর্ঘ উত্তরের জন্য প্রশ্নঃ
(ক) ‘আচ্ছা, ভালো, কিছুদিন ইহাদের ইচ্ছা পূর্ণ করিয়াই দেখা যাক” —উক্তিটি কার? তিনি কাদের কী ইচ্ছা পূর্ণ করেছিলেন? তার ফলে কী হয়েছিল সংক্ষেপে লেখো?
উত্তরঃ উক্তিটি ইচ্ছা ঠাকরুণের।
তিনি পুত্র সুশীলচন্দ্রের ইচ্ছা ও পিতা সুবলচন্দ্রের ইচ্ছা পূরণ
করেছিলেন। পুত্র সুশীলচন্দ্ৰ চেয়েছিল তার পিতার মতো বয়স অনুভব করতে আর পিতা
সুবলচন্দ্র চেয়েছিলেন পুত্রের মতো ছেলেবেলা ফিরে পেতে।
ইচ্ছা ঠাকরুণের ইচ্ছা পূরণের ফলে পিতা সুবলচন্দ্র ঘুম থেকে উঠে
দেখলেন, তিনি খুব ছোট হয়ে গেছেন। তার পড়া দাঁতগুলো আবার উঠেছে, মুখের গোঁফদাড়ি ও সব যেন কোথায় মিলিয়ে গেছে তার আর কোন চিহ্ন নেই।
জামাকাপড় ও সব ঢিলা হয়ে গেছে। আর পুত্র সুশীলচন্দ্র অন্যদিন খুব ভোরে উঠে
দৌরাত্ম করে আর ইচ্ছা ঠাকরুণের কৃপায় সেদিন ভোরে তার ঘুম ভাঙে না। বাবা
সুবলচন্দ্রের দৌরাত্মে তার ঘুম ভাঙল। আর উঠে দেখে তার কাপড়-চোপড়গুলো এমনভাবে
গায়ে আটকে গেছে যে কাপড়গুলো ছিড়ে ফেলার উপক্রম হয়। শরীরও বেড়ে উঠে, কাঁচা-পাকা গোঁফ দাড়িতে মুখ ভরে যায়। সুশীলচন্দ্রের যে মাথা ভর্তি
চুল ছিল তা হাত দিয়ে দেখে টাক পড়ে গেছে মাথায়। ইচ্ছা ঠাকরুণের কৃপায় পিতা ও
পুত্রের দুজনের মনের ইচ্ছা পূরণ হল ঠিকই, কিন্তু সেই ইচ্ছার প্রকৃত আনন্দ
তারা উপলব্ধি করতে পারেননি। কারণ সুশীল যেমন ভেবেছিলো বাবার বয়স পেলে সে
স্বাধীনভাবে দৌরাত্মা করতে পারবে, কিন্তু বাবার বয়স পেয়ে তার সে
ইচ্ছাটা আর থাকল না। তাই গাছে পড়া, আম পাড়া, দেশময় ঘুরে বেরানো আর পানা পুকরে ডুব দেওয়া এসব কিছুই তার করতে
ইচ্ছা করল না। উল্টো গাছে উঠতে গিয়ে মাটিতে পড়ে গেল। তাই লজ্জায় শেষে সে এগুলো
সব বাদ দিয়ে মাটিতে মাদুর পেতে চুপচাপ বসে থাকল ।
অন্যদিকে পিতা সুবলচন্দ্র যেমন ভেবেছিলেন ছেলে বয়স পেলে তিনি খুব মন
দিয়ে, শান্ত শিষ্ট হয়ে পড়াশোনা করবেন। কিন্তু ছেলে বয়স পেয়ে তার আর
স্কুলে যেতেই ইচ্ছা করল না। ছেলে মানুষের খেলাধূলা না করে বুড়ো মানুষের তাস পাশা
খেলা, বড়দের মত গল্প করা এমনকী অভ্যাসবশত তার ছেলে বুড়ো সুশীলকেও মারত।
আর এই দেখে উল্টো লোকজন এসে ছেলে বয়সী সুবলচন্দ্রকে গালাগাল ও মারধর করল। শেষে
পিতা ও পুত্র দুজনেই আবার একান্ত মনে প্রার্থনা করলেন যেন পূর্বের অবস্থাতেই তারা
আবার ফিরে যান।
(খ) অল্প বয়স ফিরে পেয়ে সুবলচন্দ্র
কী অনুভব করেছিলেন?
উত্তরঃ অল্প বয়স পেয়েও সুবলচন্দ্র ভুলে যেতেন যে তিনি অল্প বয়স
পেয়েছেন। তিনি নিজেকে আগের মতো বুড়ো মনে করে যেখানে বুড়ো মানুষরা তাস পাশা
খেলছেন সেখানে গিয়ে বসতেন এবং বুড়ার মতো কথা বলতেন ফলে ছেলেমানুষ সুবলচন্দ্রকে
বুড়োরা কান ধরে বিদায় দিতেন। আবার হঠাৎ নিজের অবস্থা ভুলে গিয়ে মাস্টারকে বলতেন “দাও তো, তামকটা দাও তো, খেয়ে নিই।” সুবলচন্দ্রের এই কথা শুনে মাস্টার মশায় তাকে বেঞ্চের উপর এক পায়ে
দাঁড় করিয়ে দিতেন। একদিন নাপিতকে গিয়ে বলতেন যে নাপিত কেন তাকে কামাতে আসেনি।
তার কথা শুনে নাপিত ভাবত ছেলেটি খুব ঠাট্টা করছে, তাই নাপিত বলত দশ বছর পরে সে আসবে।
আবার কোনোদিন সুবলচন্দ্র তার পূর্বের অভ্যাসমত তার ছেলে সুশীলকে গিয়ে মারতেন।
তিনি ভুলে যেতেন যে তার ছেলে এখন তার বয়স পেয়েছেন। তাই পিতার বয়স সুশীলকে মারতে
দেখে পাড়ার লোকজন ছুটে এসে সুবলচন্দ্রকে গালাগাল দিত আর কেউ, চড় থাপর ও দিতে আরম্ভ করে।
(গ) পরিণত বয়স লাভ করে
সুশীলচন্দ্রের অনুভূতি কী রকম হয়েছিল?
উত্তরঃ পরিণত বয়স লাভ করে সুশীলচন্দ্রের মনের ইচ্ছা পূর্ণ হল যদিও
কিন্তু কিছু মুশকিলে পড়লেন। সুশীল পূর্বে ভেবেছিল বাবার মতো বড় হলে স্বাধীন হলে
যা ইচ্ছা তা করতে পারবে। যেমন – গাছে চড়া, জলে ঝাঁপ দেওয়া, কাঁচা আম খাওয়া, পাখির বাচ্চা পেড়ে দেশময় ঘুরে বেড়াবে। কেউ তাকে বারণ করার থাকবে
না। কিন্তু পিতার বয়স লাভ করে সেদিন আর সুশীলের জলে ঝাঁপ দিতে ইচছা করল না, ভাবল যদি জ্বর আসে। আবার মনে করল খেলাধূলা ছেড়ে দেওয়া ঠিক হবে না
তাই একটা আমরা গাছে উঠার চেষ্টা করল কিন্তু বয়স্ক শরীরের ভার গাছের কচি ডাল বহন
করতে পারল না ফলে সুশীল মাটিতে পড়ে গেল। বুড়ো সুশীলকে এভাবে মাটিতে পড়তে দেখে
রাস্তার লোকেরা হাসাহাসি করল। এই দেখে সুশীল লজ্জা পেল। এখন সে চাকরকে দিয়ে
লজঞ্জুস আনাল ভাবল এটাই সে বসে বসে খাবে। পূর্বে সুশীল যখন লজঞ্জুস খেত তখন সে
ভাবত বাবার মতো টাকা হলে সে পকেট ভরে লজঞ্জুস খাবে কিন্তু আজ সে দন্তহীন মুখে
লজঞ্জুস দিলেও ছেলে মানুষের স্বাদ অনুভব করল না। তাই ভাবল এগুলো খেয়ে লাভ নেই
উল্টো অসুখ করবে। আর সুশীলের বন্ধুরা যারা সুশীলের সঙ্গে কপাটি খেলত তারা আজ বুড়ো
সুশীলকে দেখে দূরে ছুটে গেল। অথচ পূর্বে সে ভেবেছিল বাবার মতো বড়ো হলে স্বাধীন
হলে সারাদিন ভরে বন্ধুদের সঙ্গে কপাটি খেলবে। কিন্তু আজ সে বন্ধুদের দেখে উল্টো
বিরক্ত হল কারণ তারা গোলমাল করবে ভেবে।
(ঘ) ইচ্ছাপূরণ গল্পটির নামকরণের
সার্থকতা আলোচনা করো?
উত্তরঃ যে কোনো গল্পের নামাকরণ হয় ঘটনার নামে, কখনো চরিত্রের নামে অথবা লেখকের অভিপ্রায় অনুসারে। আলোচ্য গল্পটিতে
পিতা ও পুত্রের ইচ্ছাপূরণের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে।
পিতা সুবলচন্দ্র ও পুত্র সুশীলচন্দ্র এই দুজনের অদ্ভুদ এক ইচ্ছাকে
কেন্দ্র করে গল্পটি বিরচিত। পুত্র সুশীলচন্দ্রের দৌরাত্ম সহ্য করা পিতা
সুবলচন্দ্রের পক্ষে অসহনীয়। তাই তিনি পুত্রকে ঘরে বন্দি করে কঠিন শাস্তি দেন। আর
তখন সুশীলচন্দ্র বন্দি ঘরে বসে কেঁদে কেঁদে প্রার্থনা করে যে যদি সে পিতার মতো
বয়স লাভ করে তবে যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে। স্বাধীনভাবে দৌরাত্ম করতে তাকে কেউ
বাধা দেবেন না। অন্যদিকে পিতা সুবলচন্দ্র পুত্রের অবস্থা দেখে মনে মনে ইচ্ছা
প্রকাশ করেন যদি তিনি ছেলের বয়সে ফিরে পেতেন তবে খুব মন দিয়ে পড়াশোনা করতেন।
এমন সময় ইচ্ছা ঠাকরুণ বাইরে থেকে পিতা ও পুত্রের ইচ্ছার কথা জানতে
পেরে ভাবলেন এদের মনের ইচ্ছা পূর্ণ করে কিছুদিন দেখা যাক। এই বলে তিনি
সুবলচন্দ্রকে গিয়ে বললেন ‘তোমার ইচ্ছা পূর্ণ হইবে’ আবার পুত্রকে গিয়েও বললেন ‘কাল হইতে তুমি তোমার বাপের বয়সী
হইবে।’ ইচ্ছা ঠাকরুণের আশীর্বাদে দুইজনে খুব সন্তুষ্ট ও খুশী হলেন। যথারীতি
পরের দিন সকালে পিতা সুবলচন্দ্র খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন তার শরীরের পরিবর্তন
তিনি ছেলের বয়স প্রাপ্ত করলেন। আগের রাত্রে যেই ধূতি ও পাঞ্জাবি পড়ে ছিলেন
সেগুলো সব ঢিলা হয়ে ঝুলে পড়েছে। পড়া দাঁতগুলো আবার গজেছে, মুখের দাড়ি সব কোথায় মিলিয়ে গেছে। অন্যদিকে পুত্র সুশীলচন্দ্রের
ভোরে ঘুম ভাঙতেই চাইল না। অবশেষে যখন ভাঙল তখন দেখল সুশীলের গায়ের জামা এতটাই
গায়ে এঁটে গেছে যে ছিড়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে। সুশীলচন্দ্রের শরীর বেড়ে উঠেছে, কাঁচা পাকা গোঁফে দাড়িতে অর্ধেকটা মুখ ভরে গেছে। আর মাথার চুল পড়ে
টাক দেখা যাচ্ছে।
ইচ্ছা ঠাকরুণের আর্শীবদে পিতা ও পুত্রের ইচ্ছাপুরণ হল ঠিকই কিন্তু
দুজনের এই পরিবর্তন শুধু শারীরিক ভাবেই হল না, মানসিকভাবেও তারা পরিবর্তিত হয়ে
গেলেন। তাই পূর্বে ভাবা মতন সুশীলচন্দ্র আর দৌরাত্ম করতে পারছে না, গাছে উঠতে গিয়ে পড়ে যাচ্ছে, যেই লজঞ্জুস তার এত প্রিয় ছিল
বয়স্ক মুখে সেটা আর স্বাদ লাগছে না। বন্ধুরা খেলতে আসায় তাদের দেখে বিরক্ত হয়ে
উঠেছে। অন্যদিকে পিতা সুবলচন্দ্র বাল্যকাল ফিরে পেয়ে দৌরাত্ম করতে গিয়ে
বয়স্কদের সঙ্গে তাস খেলায় যোগদান করতে চেয়েছে, নাপিতকে ডেকে দাড়ি কামানোর কথা
বলাতে নাপিত ভেবেছে সে ঠাট্টা শিখেছে। আর বয়স্কদের তাশের আড্ডা থেকে তাকে কান ধরে
বিদায় করে দিত। আবার পূর্বের অভ্যাস মতে ছেলে সুশীলকে মারতে যেত। আর সুশীল রাগ
করে বাবাকে শাসন করত। আর এত ছোট ছেলে বাবার গায়ে হাত উঠাতে দেখে চারদিক থেকে
লোকজন ছুটে এসে কিল, থাপর, চড়, গালি সবকিছুই পিতা সুবলের ভাগ্যে বর্ষণ করত। এরপর দুজনেই হাতজোর করে
দেবীকে প্রার্থনা জানায় আগের বয়স ফিরে পাওয়ার জন্য। ইচ্ছা ঠাকরুণ তাদের আবার
আগের অবস্থা ফিরিয়ে দিলেন। পরের দিন দুজনেই আবার আগের মতো উঠে ভাবলেন যেন স্বপ্ন
থেকে জেগেছেন। সুতরাং গল্পটির নামকরণ সার্থক হয়েছে।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
১। সুবলচন্দ্রের ছেলের নাম কি?
উত্তরঃ সুবলচন্দ্রের ছেলের নাম সুশীলচন্দ্র।
২। সুবলচন্দ্রের পায়ে কিসের যন্ত্রণা ছিল?
উত্তরঃ সুবলচন্দ্রের পায়ে বাতের যন্ত্রণা ছিল।
৩। শনিবার দিন কটা সময় স্কুল ছুটি ছিল?
উত্তরঃ শনিবার দিন দুটোর সময় স্কুল ছুটি ছিল।
৪। শনিবার দিন সুশীল স্কুলে কেন যাইতে চাইছিল না?
উত্তরঃ শনিবার দিন সুশীল স্কুলে যাইতে চাইছিল না কারণ তার স্কুলে
সেদিন ভূগোলের পরীক্ষা ছিল, তার উপর পাড়ার বোসেদের বাড়িতে
সন্ধ্যের সময় বাজি পোড়ানো হবে তাই সুশীলের ইচ্ছা বোসেদের বাড়িতে গিয়ে দিন
কাটানো।
৫। স্কুলে না যাওয়ার জন্য সুশীল তার বাবাকে কি কৈফিয়ৎ দিয়েছিল?
উত্তরঃ স্কুলে না যাওয়ার জন্য সুশীল তার বাবাকে পেট কামড়ানোর
কৈফিয়ৎ দিয়েছিল।
৬। সুশীল কি খেতে ভালোবাসে?
উত্তরঃ সুশীল লজঞ্জুস খেতে ভালোবাসে।
৭। সুবল তার ছেলের জন্য কি তৈরি করে এনেছিল?
উত্তরঃ সুবল তার ছেলের জন্য পাঁচন তৈরি করে এনেছিল।
৮। সুশীল এবং সুবলবাবুর ইচ্ছে কে পূরণ করেছিল?
উত্তরঃ সুশীল এবং সুবলবাবুর ইচ্ছে ইচ্ছা ঠাকরুণ পূরণ করেছিল।
৯। সুশীলের ইচ্ছে কি ছিল?
উত্তরঃ সুশীলের ইচ্ছে ছিল সে যাতে তার বাবার মতো বয়সে ফিরে যায়।
১০। সুবলের ইচ্ছে কি ছিল?
উত্তরঃ সুবলের ইচ্ছে ছিল ছোটোবেলায় ফিরে যাওয়া।
১১। চাকর কত টাকা দিয়ে কত রাশ লজুঞ্জুস কিনে এনেছিল?
উত্তরঃ চাকর এক টাকায় একরাশ লজুঞ্জুস কিনে এনেছিল।
১২। সুশীলের কয়েকটি বন্ধুর নাম লিখ।
উত্তরঃ সুশীলের কয়েকটি বন্ধুর নাম হল রাখাল, গোপাল, নিবারণ, হরিশ এবং নন্দ।
১৩। বাস্তবিক সুশীল কি করত?
উত্তরঃ বাস্তবিক সুশীল স্কুল থেকে পলায়ন করত।
১৪। স্কুল ছুটির পরে সুবল বাড়ি ফিরে আসার পর বৃদ্ধ সুশীল চন্দ্র কী
করত?
উত্তরঃ স্কুল ছুটির পরে সুবল বাড়ি ফিরে এসে যখন একচোট ছুটোছুটি করত
তখন বৃদ্ধ সুশীলচন্দ্র চোখে চশমা দিয়ে কৃত্তিবাসের রামায়ণ সর করে সুবলকে সামনে
বসিয়ে একখানা শ্লেট দিয়ে আঁক কষতে দিত।
১৫। সুশীলদের পাড়ার বুড়ি পিসির নাম কী?
উত্তরঃ সুশীলদের পাড়ার বুড়ি পিসির নাম আন্দি।
১৬। “কী রে, বিছানায় পড়ে আছিস যে। আজ ইস্কুলে যাবি নে?” কার উক্তি?
উত্তরঃ আলোচ্য উক্তিটির বক্তা সুবলচন্দ্র।
১৭। “আচ্ছা, ভালো, কিছুদিন ইহাদের ইচ্ছা পূর্ণ করিয়াই
দেখা যাক” —উক্তিটি কার?
উত্তরঃ আলোচ্য উক্তিটির বক্তা ইচ্ছা ঠাকরুণ।
১৮। সুশীল কোন প্রাণীর মতো দৌরাতে পাড়ত?
উত্তরঃ সুশীল হরিণের মতো দৌড়াতে পাড়ত।
১৯। সুবলচন্দ্র সুশীলের পেট ব্যাথার জন্য কি ঔষধ তৈরি করেছিলেন?
উত্তরঃ সুবলচন্দ্র সুশীলের পেট ব্যাথার জন্য খুব তিতো পাঁচন তৈরি
করেছিলেন।
২০। তিতো পাঁচন দেখে সুশীল ওর বাবাকে কী বলেছে?
উত্তরঃ তিতো পাঁচন দেখে সুশীল ওর বাবাকে বলল যে ওর পেট কামড়ানো সেরে
গেছে, তাই সে স্কুল যাবে।
২১। সুবলচন্দ্র খাওয়া-দাওয়ার পর কোথায় বসত?
উত্তরঃ স্কুল ছুটির পরে সুবল বাড়ি এসে খুব দৌরাত্ম করত, আর তাই সুশীল সেই সময় চোখে চশমা দিয়ে একটি কৃত্তিবাসের রামায়ণ
নিয়ে সুর করে সুবলকে ধরে বসিয়ে একটি শ্লেট দিয়ে আঁকতে দিতেন। আর আঁকাগুলো এত
বড় দিতেন যে সুবলের তা শেষ করতে একঘণ্টা চলে যেত। এমনকী সুশীল একজন মাস্টার রেখে
দিলেন এবং মাস্টার মহাশয় রাত্রি দশটা পর্যন্ত পড়াতেন।
শব্দার্থ :
দৈবাৎ – হঠাৎ, দৈববশে।
পেট-কামড়ানো – পেটে ব্যথা।
সর্বাঙ্গ – পুরো শরীর।
আস্তিন – জামা বা শার্টের হাতা।
লজঞ্জস – লজেন্স।
দৌরাত্ম্য – দুষ্টুমি।